পোস্ট-নেশনাল মুছিবত

চেনা এক একাডেমিশিয়ান থিকা বুদ্ধের এলেমের এক নমুনা পাইলাম এমন: নদি পার হইতে নৌকা লাগে, কিন্তু পার হবার পরে নৌকাটা ছেরেফ বোঝা, শেইটা মাথায় লইয়া হাটা আলবত বেকুবি।

লেখাজোখায় মেমোরি/মেমোয়ার/ঘটনা ইউজ করা, দুই পক্ষের ভিতর একটা বাহাছ দিয়া একলা একলা একটা ন্যারেটিভ পয়দা করা খুবই নাপছন্দ আমার, বাইন্ধা পিটাবার মতো বাকশালি খাছলত মনে হয়; তাই ওনার লগে আলাপ এইখানে এস্তেমাল করতেছি না মোটেই; ওনার রেফারেন্সে বুদ্ধের কথাটা পাইছি বইলা ছেরেফ শোকরানা বরাত/আটারেন্স এইটা।

তো, বুদ্ধের ঐ নছিহত, মর্ডান এস্টেট পয়দা হইতে নেশনালিজম দরকার হইলেও পয়দা হবার পরে তারে পোস্ট-নেশনাল বানাইয়া তোলার জরুরত বুঝাইতে এস্তেমাল করতেছিলেন উনি। ওনার এই এলেমদারি এনালজি পোস্ট-নেশনাল ভাবনাটা বুঝতে বেশ উপকারি বটে। ওনার থিকা এই উপকারটা লইয়া মেমোয়ার থিকা বাইরায়া জাইতেছি আমি, এর পরের আলাপ জেনারেল, এই ব্যাপারে আমার ভাবনাটা জাহির করবো ছেরেফ, এখনকার বাহাছটা একটা ইশকুল অব থটের লগে, বেক্তি উনি গরহাজির।

শিদ্ধার্থের ঐ এনালজি বাংলাদেশের বেলায় বাড়তি কিছু জিনিশে নজর টানতে পারে, একদম লিটারাল–হরফে, শব্দে মিল দেখতে পাইবেন! মানে নৌকা আছিলো আওমি লিগের মার্কা, ৭০’র ইলেকশনে জেই আওমি লিগ জেতার ভিতর দিয়া বাংলাদেশ পয়দা হবার হিস্ট্রিকেল শর্ত পুরা হয়, জেহেতু পচ্চিম পাকিস্তানের ছিভিল-মিলিটারি এলিট পুবের পাকিস্তানের জনতার খলিফারে পাকিস্তানের গদিতে দেখতে ১০০% নারাজ আছিলো। জেই পুবের পাকিস্তানের জনতা খোদ পাকিস্তান বানাইলো, পচ্চিমের ছিভিল-মিলিটারি এলিট শেই পুবের জনতারে ইনডিয়ার এজেন্ট, উনো-মোছলমান বইলা এতোটাই ঘেন্না করতো জে, খোদ শেখ মজিবর বাগদাদিও পাকিস্তান বাচাইতে পারে নাই!

পচ্চিমের ঘেন্না তো আছিলোই, তা বাদে পাকিস্তান বাচাইতে হজরত বাগদাদির শকল কশরত ভাশাইয়া লইয়া জায় বাংগালি নেশনালিজম; ইলেকশনে জিততে জেই নেশনালিজমে শওয়ার হইছিলেন উনি, শেই ঘোড়াই তার পাকিস্তানের গদিতে বইবার খোয়াব মেছমার কইরা দেয়। লগে কেটালিস্ট বা ফুশলানি হিশাবে জোগ হইছিলো ইনডিয়ার শার্থ।

বহু দিকের ঐ দড়ি টানাটানির আখেরি ফজিলত হইলো, গর্ভে বাংলাদেশ নামের একটা বাছুর লইয়া গাভিন হইয়া পড়ে ইতিহাশ, বড়ো হইতে থাকে বাছুরটা এবং ছহি ওক্তে জনম লয় বাংলাদেশ।

তাইলে আওমি লিগ এবং বুদ্ধের ঐ নৌকা হইলো বাংগালি নেশনালিজম, এইটারে কি এখন আমরা মাথায় লইয়া হাটবো?!

রাশ্টো এবং ইতিহাশের মুশকিলের এই জমিনেই পোস্ট-নেশনাল হইয়া ওঠার আলাপ। এইটা মোটামুটি জেনারেল/ইউনিভার্ছাল আলাপই–ছেরেফ এখনকার বাংলাদেশের না, ১৯৮০-৯০ জুগ থিকাই হাজির আছে চিন্তার দুনিয়ায়, নেশনালিজম ডিনাই করা চিন্তা-হিস্ট্রিওগ্রাফি জদিও আরো আগে থিকাই ইতিহাশে বেশ আছে আশলে! তবে পোস্ট-নেশনালের আলাপটা নেশন-এস্টেট পয়দা হবার পরে, নেশন-এস্টেট হজম করার ভিতর দিয়া গজাইতেছে, ‘ডিনায়াল-অ্যাব-ইনিশিও’ না ঠিক, মানে একটা টার্ম কয়েন করলাম, ‘টেরেছপাছ অ্যাব ইনিশিও’ নামের লিগাল টার্মের ছবক লইয়া; গুগোলের জেমিনি শুরুতে না বুঝলেও পরে কইছে, ইন্টারেস্টিং টার্ম 🙂 !

তো, বাংলাদেশকে পোস্ট-নেশনাল বানাবার বেলায় তাইলে মানুশগুলার পরিচয় কেমন হবে? এই পোশ্নের জবাবে দুইটা শব্দ পাইছি: নাগরিক এবং অংশিজন, শরিক শব্দটায় বেশ অপছন্দ আছে ওনাদের, খুব শম্ভব, আন্দাজ করি অংশিজনে আরাম পাইয়া থাকবেন। আমরা খেয়াল করলে দেখবো, জুলাই রেভলুশনের লিডাররা জেই পাট্টি বানাইছে, তার নাম–বাংলাদেশ নাগরিক পার্টি।

এইখানে একটা মজার ব্যাপার কইতে হয়; বাংলাদেশে জারা দুনিয়ার চিন্তা-দর্শনের আপডেট লইয়া ভাবেন, তাদের ভিতর জারা দেশের ডমিনেন্ট মিডিয়ায় হাজির হবার মওকা পান, তারা পেরায় শবাই বামের দিকের লোক এবং আওমি লিগের লগে এই বামেদের খাতির চিরকালের। এই লোকেরাই এখন পোস্ট-নেশনাল হইয়া ওঠার ভাবনা পপুলার কইরা তুলতে চাইতেছেন; কখন? জখন আওমি লিগ আর নাই, বাংগালি নেশনালিজম ১০০% ডিফিটেড! বাংগালি নেশনালিজমের ডিফিট/পরাজয় ওনাদের কাছে খোদ নেশনালিজমের পরাজয়, অথচ দেশের ইতিহাশের পেরায় গোড়াতেই ‘বাংলাদেশি নেশনালিজম’ নামের আরেকটা জিনিশ ময়দানে নাজিল হইছে এবং বাংগালি নেশনালিজমের চুড়ান্ত পরাজয়ের পরে এখন ময়দানে কেবল বাংলাদেশি নেশনালিজমই বহাল তবিয়তে আছে, অতিতের জে কোন জামানা চাইতে মজবুত এখন বাংলাদেশি নেশনালিজম! এর মানে কি? মানে হইলো এই জে, বাংগালি নেশনালিজমই জদি না থাকে, তাইলে খোদ নেশনালিজমই থাকতে পারবে না; বাংগালি নেশনালিজম থাকলে ওনারা মাইনোরিটির পলিটিক্স করবেন, আর ঐটা নাই হইয়া গেলে শমান ‘অংশিজন’ হইয়া উঠতে হবে, শকলের, আর কোন নেশনালিজমই থাকতে পারবে না!

See also  ‘বিভাজনের রাজনিতি’

মনে কইরা দেখেন, হাসিনার বাকশালেও কতোগুলা নয়া পাট্টি হইছিলো, পুরানাগুলাও বহু কশরত করছে বড়ো হবার; কি খাইয়া বড়ো হইতে চাইছে তারা? ২০/২১ শালে এই ব্যাপারে আমি লিখছিলাম এমন: ২০৪১ তক হাসিনা/লিগের বাকশাল আছে ধইরা নিয়া তখন দুছরা বড়ো দলটা হইতে চাইতেছিলো শবাই, দুইটা বড়ো দলের একটা হবে জেইখানে আরেকটা বড়ো দল নেছেছারিলি আওমি লিগ। আগামির বাংলাদেশে আওমি লিগ থাকবে না–এমন ভাবনার বদলে বিম্পির না থাকাই তাদের কাছে নর্মাল লাগছে এবং বিম্পির না থাকা আগাইয়া দিতে হাসিনারে মদদও দিছে তারা, হাসিনাও তাদের মদদ দিছে দুছরা বড়ো দলটা হইতে, বিম্পির না থাকা কনফাম করতে! অথচ পোস্ট-নেশনাল রাশ্টো বানাইতে শবচে বড়ো বাধার নাম আছিলো আওমি লিগ/বাংগালি নেশনালিজম!

আরেকটা মজার জিনিশ আছে। ১৯৮০’র জুগে ছোশাল ছাইন্সে টেডিশন, নেশন ইত্তাদি জে ইমাজিনারি, বানানো বাকোয়াজি–এমন ভাবনাচিন্তা বেশ পোতিশ্ঠা পায়, এই পোস্ট নেশনাল ভাবুকরাও গড়পরতা অমনই ভাবেন খুব শম্ভব। কিন্তু এনারাই আবার বাংলাদেশি নেশনালিজমরে আদৌ কোন নেশনালিজম হিশাবেই মানতে নারাজ! কেননা, এইটা ১০০% বানানো বইলা নিজেই জানান দেয়, এইটার কোন টেডিশনের আবদার নাই, বাংলাদেশ জখন শুরু, তখনই মাত্র এই নেশনালিজমের শুরু, এই দেশ নাই তো ঐটাও নাই! মানে বানানো হইলেও এতোটা বানানো হবে, এইটা তারা একদমই মানতে পারে না, একটু মেমোরি, একটু নশ্টালজিয়া তাদের লাগেই মনে হইতেছে 🙂 !

ওনারা তাইলে আমাদের শরিক (অংশিজন) আর ছিটিজেন বানাইতে চাইতেছেন আমাদের শবাইরে (বাংগালি নেশনালিজমের আর আশা না থাকলে উপায়ই বা কি 🙁 )। তা, এইটা আর নতুন কি, আমরা তো অলরেডি শরিক আর নাগরিক; নতুন হইলো, আমরা নাকি শকলে শমান!

‘শমানে’র আইডিয়া বেশ মনোহর লাগতে পারে আমাদের, ইতিহাশ জদিও অতো আশা দেখাইতে পারতেছে না! এই আইডিয়ার ভিতর মস্ত একটা ফেছিজম বেশ লুকাইয়া থাকতে পারে বটে। শবচে ভালো নজির আমরা পাবো চায়নায়, মোছলমান উইঘুরদের শমান বানাবার তরিকার ভিতর।

কিন্তু পোস্ট নেশনাল রাশ্টে শরিকি আর নাগরিকতার আইডিয়া কি আর কোন তরিকায় চর্চা করা জাবে না!? এইটা আমাদের পরখ কইরা দেখা দরকার, থিয়োরেটিকেলি।

বাংলাদেশ নাগরিক পাট্টির কথা-কারবারে একটা ‘বহু’র আইডিয়া আছে, জেইখান থিকা তারা ‘ইনক্লুছিভ’ হবার একটা তাগিদ পেশ করেন। আমরা খেয়াল করলে দেখবো, ‘ইনক্লুছিভ’ হওয়া মানে বহু’র মিলনে আখেরে ‘এক’ হওয়াই, মানে ইউনিয়ন গড়তে চাইতেছে তারা, বহু’র ভিতর কোন কনফেডারেট চুক্তি হইতেছে না এইখানে, একটা মস্ত ‘এক’ তার ভিতর ঢুকাইয়া নিতে চাইতেছে শবাইরে! ফলে এইটা একটা ছফর, বহু থিকা একের দিকে ছফর।

দেখা জাইতেছে, নেশনালিজম জেমন এক্সক্লুশনারি ভায়োলেন্ট হইতে পারে, তেমনি একটা নন-নেশনালিস্ট হোমোজেনাইজেশনও বেশ কোয়ের্ছিভ হইয়া উঠতে পারে বা গায়ের জোরে কায়েম করা হইতে পারতেছে, হইতে হয় আশলে– ঐ হোমোজেনাইজেশনের শার্থে! ফলে পরেরটার ভিতর আগেরটার নিদান বা শাফি নাই আদৌ! ইউনিয়ন বানানির ভিতর দিয়া মস্ত একটা ‘এক’ হবার বাশনা আখেরে একটা মুশকিল পয়দা করতে পারে; এমন জে, বাংগালি বা চাকমা বা হিন্দু বা বৌদ্ধ বা মোছলমান বা রাজবংশি বা বিহারি হওয়াটা ‘(শরিক) অংশিজন’ বা ‘নাগরিক’ হইয়া ওঠার একটা বাধা; এবং তখনই ফ্যাছাদ এবং গায়ের জোর আর জুলুমের শম্ভাবনা।

এই আইডিয়া বুঝতে আমি আইডিয়ার একটা টাইপের কথা কইতে চাই, ‘আইডিয়ালিজম’ হিশাবে চিনবেনও অনেকে, তবে আরো ভাইংগা আমি কইবো, ‘পেলেটো ছিনড্রোম’ নামে একটা মড়ক আছে; এই মড়ক মানুশকে আগে একটা আইডিয়াল কিছু বানাইতে চায়, তা না হইলে একটা আইডিয়াল এস্টেট বানানো জাইতেছে না। মানুশ জেমন আছে, তারে কেমনে ম্যানেজ করা জায়, শেই হেকমত তালাশ করার বদলে খোদ মানুশকেই আগে বানাইয়া লইতে চায়–এই অর্থে এই টাইপের আইডিয়া ফেছিস্ট হইয়া ওঠে। মার্ক্সবাদি অনেকে ভাবে মার্ক্স ঝগড়া কইরা পেলেটো থিকা বাইরায়া গেছেন, এইটা ভুল; হেগেলের মুরিদ হিশাবে মার্ক্সে পেলেটো কাফি আছে এবং শেই কারনেই মার্ক্সের পলিটিকেল বাছুরেরা আখেরে ফেছিস্ট হইয়া ওঠে, আইডিয়ালিজমের তাড়না না মড়ক ঢুইকা আছে তাগো মনের ভিতর। এই মড়ক এমনকি ‘ভালো’র জন্ন খুনের মোরাল এজাজতও দেয়, এই জামানার বহু খুনের পিছে ঐ এজাজত আছে, আমাদের তাহের-হাসিনা-বাগদাদিও জেই খুনির দলে পড়বেন।

See also  লা শরিক আল্লা

এইখানে আমার আরেকটা টার্ম আনতে চাইবো–ছিংগুলারিফিকেশন। আজব ব্যাপার হইলো, তৌহিদের আইডিয়া শমাজ-পলিটিকেল জিন্দেগির শকল এরিয়ায় এস্তেমাল করতে চায় অনেকেই, এমনকি জেই লোকজন ধার্মিক না, তারাও; বাস্তবে বরং শাচ্চা ধার্মিক লোকেরা পেরায়ই তৌহিদের আইডিয়া তার ধর্ম-একিনের বেলায়, খোদার বেলায় ঠিকঠাক রাইখা শমাজ-পলিটিকেল ব্যাপারে বহু’রে আরামে মাইনা নিতে পারে, কিন্তু ছাইন্সকামি লোকেরা বরং পেরায়ই খোদায় ততো একিন না কইরা হরদম তৌহিদের চর্চায় ব্যস্ত হইয়া পড়ে! মানুশের বহু পরিচয় নর্মাল; কোথাও শে অমুকের ঝি, কোথাও বা অমুকের ভাতার, কোথাও মোছলমান বাংগালি, কোথাও বাংগালি মোছলমান, কোথাও ইনডিয়ান বাংগালি, কোথাও বাংলাদেশি মান্দি, এমন হাজারো পরিচয়/আইডি তার; এগুলার কোনটাই কোনটার লগে কন্ট্রাডিক্টরি না। বাংলাদেশে বাংগালি নেশনালিজম এই শব পরিচয় মুলতবি কইরা শবাইরে বাংগালি হইতে কইছে, এখন পোস্ট-নেশনালিস্ট এস্টেট বানাইতে আরেক দল কইতেছে, ‘(শরিক) অংশিজন’ বা ‘নাগরিক’ হইতে। এইটারেই কইলাম, ছিংগুলারিফিকেশন। এইগুলা কোয়ের্ছিভ ফেছিস্ট।

ওদিকে, রাশ্টের ‘(শরিক) অংশিজন’ বা ‘নাগরিক’ তো আমরা অটোমেটিক এবং অনেকগুলা পরিচয় ম্যানেজ করার একটা তরিকা ইতিহাশে নতুন রাশ্টোগুলা বানাইছে আগেই। জেমন ধরেন, আমেরিকান হবার ভিতর দিয়াই আপনে চাইনিজ বা জার্মান বা ইংরাজ বা রাশান হইতে পারেন। আমেরিকান এইখানে ছেরেফ একটা পলিটিকেল-ইকোনমিক টার্ম, হাজার বছরের টেডিশনের কোন আবদার বাদেই। এইটারে নকল কইরাই হজরত জিয়া বাংলাদেশি নেশনালিজমের পয়গাম দিছেন বাংলাদেশের পলিটিক্সে।

হজরত জিয়ার আইডিয়ায়ও বেশ কিছু ঝামেলা আছে। কিন্তু উনি এইটা আনছিলেন আশলে নেশনানিজমকে নিউট্রালাইজ করতে! মানে, তার আগে বাংগালি নেশনালিজম আছে ময়দানে, ইনডিয়াতেও বাংগালি আছে, এই নেশনালিজমের ব্যাপারে মোছলমানদের বহু নালিশ আছে, ওদিকে পাহাড়ে বাড়তেছে জুম্ম নেশনালিজম, বিহারি আছে, উর্দু আছে আছে দেশে, শমতলের মান্দি বা রাজবংশি আছে–এইগুলারে একটা পলিটিকেল-ইকোনমিক কোঅপারেটিভের আওতায় আনার আইডিয়া আছিলো ওনার। কিন্তু শেইটারে নেশনালিজম হিশাবে এখন বিম্পি জেইভাবে চর্চা করে, করতে চায়, তা নেশনালিজমের গোড়ার ঝামেলাগুলা বহাল রাখে পেরায়ই, হজরত জিয়া এতোটা করেন নাই, বাট তার আইডিয়ার ভিতরেই বিম্পির এখনকার কায়কারবারের গোড়াটা আছিলো।

এইখান থিকা বাইরাবো কেমনে তাইলে আমরা?

শুরুতেই আমাদের বুঝতে হবে জে, টেরিটরি এবং ছিটিজেনশিপ অর্থে নেশনের একটা আইডিয়া লাগবে আমাদের; নেশন জিনিশটারে ঘোর নেশনালিজমের বাইরে আইনা বোঝা শম্ভব, বুঝতে হবে আমাদের। মর্ডান এস্টেটগুলা নেশন এস্টেট একেকটা, শেই নেশনের কোন আইডিয়া ইতিহাশে আগে না থাকলেও এখনকার রাশ্টোটা আলবত নেশন এস্টেট। নেশনের দুইটা আইডিয়া এখনকার দুনিয়ায় আছে: জেমন ধরেন, অনেকগুলা দেশ আছে, জেইগুলার মানুশেরা ‘আরব’ জাতির মেম্বার হিশাবে পরিচিত; জর্ডানের একজন ছিটিজেন একই লগে আরব এবং জর্ডানি–তার নেশন দুইটা। তৌহিদের আইডিয়া তাদের খোদায়ি ব্যাপারে, শমাজ-রাশ্টের শবখানে তৌহিদ মারাইতে হয় নাই তাদের। জর্ডানি একজন আরবের কাছে জর্ডান হইলো টেরিটরি আর ছিটিজেনশিপ এবং ইকোনমিক শার্থের মামলা, তার বেশি জর্ডানি নেশনালিজম মারাইতে জাইয়া তারা ‘আমরা আরব না, জর্ডানি’ বইলা ততো চিল্লায় না! নেশনালিজম একটা আইডিয়া, কিন্তু এখনকার দুনিয়ায় ছেরেফ লিগাল আর ইন্টারনেশনাল কমুনিকেশনের ভাশার ভিতরে নেশন শব্দটা আছে গোড়াতেই! ঐ জে দেখেন, ইন্টারনেশনাল কইতে/লিখতে হইলো আমাদের।

ছিংগুলারিফিকেশনের এজেন্ডা (এমনকি শবাই আমরা ‘মানুশ’–এইটাও ছিংগুলারিফিকেশন।) ছাড়তে পারলে আমাদের আইডি বা পরিচয়গুলার ভিতর কোন ঝগড়া-ফ্যাছাদ নাই।

হজরত জিয়া জখন বাংলাদেশি নেশনালিজম আনছিলেন, তখন বাংগালি নেশনালিজমের ঘোর লাইগা আছে আমাদের ইতিহাশে, তাই ঐটারে নিউট্রালাইজ করার জরুরত আছিলো; কিন্তু এখন বাংগালি নেশনালিজম পুরা ডিফিটেড/পরাজিত, শেই জরুরত আর নাই, এখনো আমরা জদি বাংলাদেশি নেশনালিজম শেই বাংগালি নেশনালিজমের মতো কইরাই চর্চা করতে থাকি, শেইটা আখেরে বেশ খারাপ ফলাফলই দিতে পারে!

শেইটা তখন শমাজ-পলিটিক্সেও তৌহিদ চর্চার মতো হইয়া ওঠার শম্ভাবনা আছে এবং রেজিস্টেন্স হিশাবে জুম্ম অথবা বাংগালি নেশনালিজম খুবই তাজা রাখার ফুশলানি হিশাবে কাম করতে পারে! আরো বিপদ হইতে পারে এমন জে, বাংলাদেশি নেশনালিজমের বাহানায় বা ছুরতে শেই বাংগালি নেশনালিজমের ভুতই ভিতরের কায়কারবার চালাইতে পারে!

এইখানে হজরত জিয়ার টাইমের পাহাড়ের একটা ঘটনার কথা কইতেছি। ঘটনাটা আমি শুনছি, জার লগে ঘটছে, উনি হয়তো কইবেন কখনো, আমি বেনামে কইতেছি।

See also  ফেছিজমের শম্ভাবনা: ডান-বামের পলিটিক্স আর পলিটিকেল বাশনায় ইছলাম

ঘটনা এমন: তখন পাহাড়ে বাংলাদেশ আর্মি পাহাড়ে বেশ মাই ডিয়ার আচরন করা শুরু করে; পাহাড়ের অবাংগালিদের দেখলেই হাত বাড়াইয়া দেয়, কোলাকুলি করে এমনকি, ভাই ভাই ডাকে–কেননা, শবাই তো বাংলাদেশি! তো, ঘটনার নায়ক একজন তিরিপুরা হিন্দু, শাবালকও হন নাই তখন; তার দিকে হাত বাড়াইয়া দিলো মিলিটারির এক পোলা; কিন্তু আমাদের শেই নায়ক হাত মিলাইতে রাজি হইলো না! এবং তখন পাওয়ার তার খাছলত জাহির করলো, হাত মিলাইতেই হবে, আমাদের নায়ক নারাজ; তখন মিলিটারির পোলা আমাদের নায়কেরে থাপ্পড় দিলো! এইখানে কইয়া রাখতে হয়, পাহাড়ে জুদ্ধ কিন্তু জিয়ায় শুরু না, জনশংহতি পয়দা হইছে ১৯৭৪ শালে, শেখ বাগদাদি পয়দা হুমকি দিছিলেন জে, পাহাড়ে পাহাড়িদের মাইনোরিটি বানাইয়া দেবেন, পাহাড়ের শকল জাতিকেই বাংগালি হইয়া জাইতে কইছিলেন! আমি কইতেছি এই জে, জিয়ার বাংলাদেশি নেশনালিজমের বাহানায়ও শেই বাংগালি নেশনালিজমই চলতেছিলো ভিতরে ভিতরে!

তাইলে দেখা জাইতেছে, বাংলাদেশি নেশনালিজম পিরিতে বাদ্ধ করতে চায়, তিরিপুরা পরিচয় জেন বা বাংলাদেশি হবার বাধা! কিন্তু বাংলাদেশি হওয়া তো অটোমেটিক, বাংলাদেশ পয়দা হবার মানেই হইলো, আমাদের নায়ক বাংলাদেশি ছিটিজেন-শরিক, উনি একজন বাংলাদেশি তিরিপুরা হিন্দু পোলা! এর মানে হইলো, বাংলাদেশি হওয়া আর বাংলাদেশি নেশনালিজম এক না; ইন্টারনেশনাল/ইউএন কমুনিকেশন মোতাবেক নেশন এস্টেট বাংলাদেশের ছিটিজেন হিশাবে উনি বাংলাদেশি জাতির মেম্বার বটেন, কিন্তু বাংলাদেশি নেশনালিস্ট হিশাবে উনি একটা পরিচয় লইয়া হাটেন না!

এইখানে তাইলে একটা মুশকিল পাওয়া জাইতেছে, শেই মুশকিলের আছান করতে হবে আমাদের। উপায় কি?

এই মুশকিলের আছান আশলে বেশি কঠিন কিছু না। রাশ্টো অটোমেটিক একটা নেশনালিটি পয়দা করলেও রাশ্টো আর জাতি এক না। একটা রাশ্টে বহু জাতি থাকতে পারে; জাতি পরিচয় পলিটিকেল হইতে পারে আবার কালচারাল হইতে পারে–এই দুইটা গুলাইয়া একটা মাত্র শরবত বানানিরেই আমরা কইতে পারি শমাজ-পলিটিক্সে, জিন্দেগির দুনিয়াবি ছেক্টরেও তৌহিদের আইডিয়ার চর্চা।

রাশ্টো জেই জাতি পয়দা করে শেইটা পলিটিকেল-ইকোনমিক, কিন্তু রাশ্টো পয়দা হবার আগেই কালচারাল অর্থের জাতি আছে, থাকে। রাশ্টের নামে একটা পলিটিকেল-ইকোনমিক জাতি পাইলেও তার ভিতরে বেশুমার কালচারাল জাতি থাকতে পারে, থাকে। তাইলে রাশ্টো কি হইলো? জে কোন রাশ্টোকেই কালচারাল বহু’র কনফেডারেশন হইতে হয়, নাইলে জুলুমের শম্ভাবনা পয়দা হয়।

আমরা খেয়াল করলে দেখবো, রাশ্টে একটা মাত্র জাতির আইডিয়া জেমন ছিংগুলার হোমোজেনেইটি পয়দা করতে চায়, তেমনি ‘নাগরিক-অংশিজন’ বানাবার ভিতর দিয়া কোন জাতিই থাকা জাবে না বইলাও ছিংগুলার হোমোজেনেইটি পয়দা করতে চায়!

বাস্তব বাংলাদেশে আমরা শবাই অটোমেটিক ছিটিজেন-শরিক, পলিটিকেল-ইকোনমিক জাতি হিশাবে বাংলাদেশি, কিন্তু ভিতরে কালচারাল জাতি অর্থে কেউ বাংগালি, কেউ তিরিপুরা, কেউ উর্দু-বিহারি, কেউ মোছলমান, কেউ বৌদ্ধ, কেউ মান্দি, কেউ রাখাইন, কেউ মুন্ডা; এই কালচারাল বহু জাতি মিলা আমরা একটা কোঅপারেটিভ বানাইছি, জেইটার নাম বাংলাদেশ। আমরা জে কেউ একলা জা পারতাম, কখনো কখনো বাংলাদেশি রুপে তারচে বেশি কিছু পারতে চাই, এই শমবায় আমাদের শকলের তাকত বাড়াইছে, কেননা, আমরা একলা না, আমরা অনেকের লগে দোস্তি করছি!

এইভাবে তাইলে ‘উপজাতি’ আর ‘আদিবাসি’ তর্কেরও একটা ফয়ছালা পাওয়া জাইতে পারে; আমরা শবাই একটা জাতি, এই জাতিরা মিলা আমরা একটা কনফেডারেশন বানাইছি, বাংলাদেশ জেইটার নাম, বাংলাদেশি নামের জেই পলিটিকেল ইকোনমিক টেরিটরির একজন হিশাবে আমরা শবাই অটোমেটিক ছিটিজেন-শরিক, বাংলাদেশি।

বাড়তি নোট: আমি আশা করবো, বাংলাদেশ নাগরিক পাট্টি ঐ পোস্ট-নেশনালের ফান্দে পড়বে না; জাতির আইডিয়া থিকা শকলকে বাইর করার ফন্দি-ফিকিরের বদলে বহু জাতির বাস্তবতা মাইনা নেবে। এবং এইভাবে আরেকটা জবাবও দিতে পারবে তারা: বিম্পির থিকা তাদের পলিটিক্স কোনখানে জুদা, তাদের পলিটিকেল মনজিল কি–এই পোশ্নের জবাব এইখানে; বিম্পি ছিংগুলারিটির চর্চা করে, পিরিতি চাপাইয়া দিতে চায়, উল্টাদিকে তারা শকলের রাজি-খুশির ভিতর দিয়া কনফেডারেশন হইয়া উঠতে চায়। তাদের ভিতর কতোগুলা নিশানা আছেও, কিন্তু অতি ধোয়ায় আবছা, আমি শেইটারে কিলিয়ার ছুরত দেবার চেশ্টা করলাম এইখানে…! লেখাটা আরো ঘশামাজা করা লাগতে পারে, পাবলিকের দরবারে পেশ করি এখন, পরে কখনো করার ফুশরত পাবো হয়তো।

এলাহি ভরশা।

#রকমশাহেরশালিশি ৩০এপ্রিল২০২৫

comment/ফতোয়া

Translate »