দেশে হরেক পলিটিকেল ফ্যাছাদ হাজির আছে, তাতে বহু পক্ষের বহু লজিক হাজির হইতেছে; কিন্তু আমি আন্দাজ করি, আমরা একটা বুনিয়াদি মুশকিলে পড়ছি এখন–ইতিহাশের বয়ানের মুশকিল; এক কথায় আমি এই টপিকটার নাম দিতে চাই, ‘রেশনালাইজিং বাংলাদেশ’।
ইতিহাশের এমন একটা খনে হাজির হইছি আমরা জেইখানে রাশ্টো হিশাবে বাংলাদেশকে রেশনালাইজ করার আওমি/বাওমি বয়ানটা বাতিল হইয়া গেছে, ঐ বয়ানকে দেশের বেশিরভাগ মানুশ এখন ইনডিয়ার ইতিহাশের ছাব-ছেকশন হিশাবে চিনতে শুরু করছে, বহু মিথ আর মিছা কুয়াশা উতরাইয়া শত্ত/টুরুথ উকি দিতেছে ইতিহাশে; ফলে ‘রেশনালাইজিং বাংলাদেশ’ একটা খুব নয়া পোজেক্ট হইয়া উঠছে এখন, একটা খুব বুনিয়াদি পোশ্নের জবাব দিতে পারতে হবে আমাদের, ইতিহাশের এই নয়া জামানায়–কেন বাংলাদেশ?
ইতিহাশের মুশকিলটা আরো খোলাশা করা জায় এইভাবে: ইতিহাশের আওমি/বাওমি/ইনডিয়ান বয়ানে ‘দুই জাতি’ থিয়োরি একটা ফ্যালাছি, জিন্না হইলেন ঐ ইতিহাশে ভিলেন, ঐ বয়ানে পাকিস্তান একটা ইলেজিটিমেট রাশ্টো, দুই পাট ১২০০ কিলো দুর দুর বইলা অ্যাবনর্মাল রাশ্টোও বটে! বাংলাদেশ হইলো শেই ফ্যালাছির কারেকশন, ‘দেশভাগের বেদনা’ উতরাইয়া ‘অখন্ড ভারত’ হইয়া ওঠার রাস্তায় ইতিহাশের কয়েক কদম আগাইয়া জাওয়া। আজকে ‘অখন্ড ভারত’ আইডিয়া খুব বিজেপি-আরএছএছের মিথিতিহাশ মনে হইলেও ঐটা কংগেরেছি/গান্ধির ‘ভারত’ রাশ্টো-ভাবনাই, বিজেপিরা গান্ধির বহু নিন্দা এখন করলেও তারা আদতে গান্ধির ‘ভারত-রাশ্টো’ পোজেক্টটাই আগাইয়া নিতেছে ছেরেফ।
ইতিহাশের এই আওমি/বাওমি/ইনডিয়ান বয়ান জদি আমরা বাতিল কইরা দেই, এই বয়ানটারে আমরা জদি বাংলাদেশে বাকশালি ফেছিবাদের হিস্ট্রিকেল শর্ত হিশাবে দেখতে পাই, টুরুথের বেশুমার ঠেলায় জদি ঐ বয়ান বাতিল কইরা দিতে হয় আমাদের, তাইলে জিন্না হইয়া ওঠেন ইতিহাশের একজন নায়ক, জিনি বিটিশ ইনডিয়ায় মাইনোরিটির ছিকিউরিটি লইয়া চিন্তা করছেন, গান্ধি তারে ‘অখন্ড ভারতে’র পিএম বানাবার লোভ দেখাইলেও জেই জিন্না বেক্তির বাশনারে কালেকটিভের (বিটিশ ইনডিয়ার মাইনোরিটি) শার্থে কোরবানি দিছেন এবং ইতিহাশের দরকারেই, পাকিস্তান হাছিল করতেই ‘দুই জাতি’ থিয়োরি দিয়া পাকিস্তানকে লেজিট রাশ্টো (রেশনালাইজিং পাকিস্তান) হিশাবে এস্টাবলিশ করতে চাইছেন এবং কামিয়াব হইছেন।
এইখানে তাইলে রাশ্টো হিশাবে বাংলাদেশ মস্ত একটা মুছিবতে পইড়া জাইতেছে; পাকিস্তান জদি লেজিট রাশ্টো হয়, জিন্না জদি ইতিহাশের নায়ক হয়, তাইলে বাংলাদেশকে রেশনালাইজ করবো কেমনে আমরা, কেন পাকিস্তানই আমাদের মনজিলে মকছুদ না?!
ইতিহাশে আরো কিছু টুরুথ এমনভাবে হাজির হইছে জে, ঐগুলার দরকারি ফয়ছালা বাদে ‘রেশনালাইজিং বাংলাদেশ’ পোজেক্টের মুশকিল আছান হইতে পারবে না। জেমন:
ক. ১৯৭০ ইলেকশনে জেতার পরেও শেখ মুজিবের হাতে খমতা দেয় নাই ইয়াহিয়া খান, এইটা কি জেনারেল খানের আনজাস্ট কাম, বেইনছাফি? তা জদি পোরমান করা না জায়, তাইলে বাংলাদেশকে রেশনালাইজ করায় মুশকিলে পড়বো আমরা। শাদা চোখে এইটা আলবত বেইনছাফি, কিন্তু ইতিহাশের নয়া টুরুথ হইলো, শেখ মুজিব আগরতলা কন্সপিরেছি করছে, ইনডিয়ার ঘুটি হিশাবে পাকিস্তানের ভিতরে পলিটিকেল মোড়ল হইয়া উঠছে; মুজিব জদি ইনডিয়ার মান্চুরিয়ান কেন্ডিডেট হয়, তবু কি তার হাতে পাকিস্তানের খমতা না দেওয়া বেইনছাফি হিশাবে ভাবতে পারবো আমরা? ঐ ইনডিয়ান কন্সপিরেছিতে জদি ভাশানিও থাকে এবং ইনডিয়ার লগে কনফেডারেশন বানাবার খোয়াব লইয়া ভাশানি জদি ইন্দিরারে চিঠি দেয় এবং শেইটা হাছিল করতেই জদি মুজিবেরে ভাশানি ইলেকশনের ময়দান ছাইড়া দেয়, তবু কি ইয়াহিয়া আনজাস্ট? বাংলাদেশ পক্ষের লজিক কি, কেন ইয়াহিয়া আনজাস্ট, শেইটা দেখাইতে না পারলে খোদ বাংলাদেশই ইতিহাশে রাশ্টো হিশাবে রেশনাল থাকতে মুশকিলে পইড়া জাইতেছে!
এই জিনিশগুলা বোঝাবুঝির বেলায় খোদ ইতিহাশ বোঝার একটা তরিকা বাদ দিতে হবে আমাদের; ইতিহাশ এমন একটা জিনিশ জেইটা কোন একটা মোমেন্টের কয়েকজন এক্টরের বাশনা দিয়া ডিটারমাইন্ড হয় না ছেরেফ; ইতিহাশে বেক্তি জেমন ভেলু অ্যাড করে, তেমনি বেক্তির হইয়া ওঠা, এমনকি কোন একটা মোমেন্টে বেক্তির বাশনা/খায়েশ কি হবে, তাও অনেকখানি বানাইয়া দেয় ইতিহাশ।
১৯৭০-৭১ শালে বেক্তি এক্টর হিশাবে আমরা দেখতেছি ইয়াহিয়া-মুজিব-ভুট্টো, কিন্তু ওনারা ৩ জনেই আগের ইতিহাশে পাকিস্তানের আমলনামার ভিতর দিয়া পয়দা হইছে, জেইখানে আগের ১২ বছর পাকিস্তানের ইতিহাশে মেইন এক্টরের নাম আইউব খান।
আইউব আর হাসিনার একটা মিল অনেকেই খেয়াল করতে নারাজ: দুইজনেই ডেমোক্রেছি মুলতবি কইরা রাখছিলো; লজিকও মোটামুটি ছেইম! মানে, হাসিনারে দিয়া বাংলাদেশের কলোনিয়াল-ছিভিল-পলিটিকেল এলিট আর বুরোক্রেছি দেশে পাকিস্তানবাদি পলিটিকেল ফোর্ছ দমনের বাহানায় ইছলামিস্ট পলিটিক্স ঠেকানোর ধান্দা করছিলো; বাস্তবে দেখা জাইতেছে, ডেমোক্রেছি মুলতবি রাখায় ইলেকশন-নাগর জনতা আর ইছলামিস্ট পলিটিক্স মোর্চা বানাইয়া হাসিনার পলিটিকেল ফোর্ছের পুরাটা খেদাইয়া দিছে এবং দেশের ইতিহাশে ইছলামিস্ট পলিটিক্স এতো পাওয়ারফুল আগে কখনোই আছিলো না।
ওদিকে, আইউব খান ইনডিয়ার বিরুদ্ধে জুদ্ধ করছে, পাকিস্তান রাশ্টোকে ইউনাইটেড করার কথা কইছে, হাসিনার মতোই উন্নয়নের গান গাইছে, কিন্তু বাস্তবে পাকিস্তান রাশ্টো আরো দুর্বল হইছে, ইনডিয়ার শার্থ হাছিল কইরা দেবার পলিটিক্স পুবের পাকিস্তানে পাওয়ারফুল হইছে; ডেমোক্রেছি মুলতবি রাখার মওকায় পুবের পাকিস্তান আর ইনডিয়ার শার্থ একটা বিন্দুতে মিলছে বইলা আওমি লিগ পুবের পাকিস্তানের মানুশকে একিন করাইতে পারছে– আগরতলা মামলাকে পুব পাকিস্তানের শার্থের উপর হামলা বইলা একিন করছে মোছলমান বাংগালি।
ডেমোক্রেছি মুলতবি রাখলে ভিতরে ভিতরে এমন পলিটিকেল ফোর্ছ ডেভলাপ করার শম্ভাবনা পয়দা হয়, জারা কিনা ডেমোক্রেছি-ফেরেন্ডলি নাও হইতে পারে; মুজিবের আওমি লিগ ঐ আন্দাজের পক্ষে ইতিহাশে কাফি আলামত রাইখা মরছে–বাকশাল, মুজিব আর হাসিনা; আর এখনকার বাংলাদেশের ইছলামিস্ট পলিটিক্স ডেমোক্রেছিতে কতোটা এজাজত দেয়, শেই ব্যাপারে দেশের বহু মানুশের শন্দেহ আছে; এইখানে আমাদের খেয়াল করা দরকার জে, ইছলামিস্ট পলিটিক্সকে আগে পাকিস্তানবাদের নালিশ দিয়াই ঘায়েল করা জাইতো, কিন্তু হাসিনা পালাবার পরে ঐ চাপাতি পুরা ভোতা হইয়া পড়ছে, ফলে ইছলামিস্ট পলিটিক্সের কোন থিয়োরেটিকেল বিরোধিতা করা জাইতেছে না, কেননা, তেমন কোন লিটারেচার পয়দা হই নাই আগে, পাকিস্তান ইশু তো আছেই হাতের কাছে, তাই জরুরতই মালুম করতে পারে নাই কেউ! তা বাদে, ইছলাম দেশে ছেন্সিটিভ ইশু, বাংগালি নেশনালিজমের ইছলামোফোবিয়া এড়াইতে এবং লুকাইতেও পাকিস্তান ইশুই ছেইফ আছিলো!
ওকে, টপিকে ফেরা জাক; ডেমোক্রেছি মুলতবি রাখা শেই আইউবের জামানায় শেখ মুজিবের আওমি লিগ জে কতোটা বড়ো হইছে, তা খুব শম্ভব একদমই মালুম হয় নাই কারো; ১৯৫৪ শালে মিনিশ্টার হিশাবে শেখ মুজিবের দুই নাম্বারি (বেআইনি কায়দায় আওমি লিগের লোকজনেরে কারখানায় কাচামাল ছাপ্লাই দেবার একচেটিয়া লাইছেন্স দেয় শিল্পমন্ত্রি মুজিব।) আওমি লিগেরে মস্ত ইকোনমিক বুনিয়াদ জোগান দেয় এবং আইউবের ১২ বছরে শেই বুনিয়াদ মজবুত হয় ভিতরে ভিতরে।
পচ্চিমে ভুট্টোর তুমুল মুভমেন্টে ঐখানের ছিভিল-মিলিটারি এলিটের ভিতর আইউব খান আর একছেপ্টেবল থাকতে পারলো না, বিদায় নিতে হইলো তার। শেই ডামাডোলে মুজিবেরা আগরতলা মামলা থিকা অটো-মুক্তি পাইয়া জায়। মুজিবের ২০ দিন আগে পচ্চিমে ভুট্টোরে ছাড়ে আইউব আর ১ মাশ পরে আইউবকে ছাড়তে হয় খমতা।
আমরা খেয়াল করলে দেখবো, মুজিবের মুক্তির আশল কারিগর ভুট্টো! কেননা, মুক্তির পরে ভুট্টো আইউবের লগে খাতির জমায় নাই, বরং গনতন্ত্র চাইয়া, জেনারেল আর আমলাদের হাত থিকা জনগনের হাতে খমতা ফেরাবার কছম খাইছেন; পুবের পাকিস্তানরে ‘ভাই’ বইলা শমতার বুনিয়াদে খাড়াইয়া একলগে দেশ গড়ার ওয়াদা করতেছেন। ভুট্টো জদি ধরেন আনু মুহাম্মদ হইতেন, তাইলে হাসিনার কেরাইছিছ মোমেন্টে জেমন তেল-গ্যাশ-রামপাল মুভমেন্টকে ঘুম পাড়াইয়া দিতেন আনু, তেমনি পুবের পাকিস্তানের মুভমেন্ট দমাইতে ভুট্টো আগে আইউবের লগে মোর্চা বানাইতেন হয়তো। আইউব হয়তো শেই কারনেই মুজিবের ২০ দিন আগে ভুট্টোরে ছাড়ছিলো। কিন্তু ভুট্টো তা করে নাই, আইউবেরে লেজিট পেছিডেন হিশাবেই মানে নাই ভুট্টো। কিন্তু এদিকে, মুজিবের লিগের ৬ দফার মুভমেন্ট কিন্তু পচ্চিমের কাছেই চাওয়া–আইউবেরে লেজিট মাইনাই, পুবের পাকিস্তানের মানুশের মুভমেন্ট; পাকিস্তানের পলিটিকেল ছিস্টেমের ব্যাপারে ৬ দফার আলাপ এই জে, পেছিডেন্সিয়াল শাশনের বদলে মুজিব চাইছে পার্লামেন্টারি ছিস্টেম; ৬ দফায় আইউব ঠিক অবৈধ পেছিডেন না, আইউব উৎখাতের মুভমেন্টও না ৬ দফা! আইউবের বেছিক ডেমোক্রেছি মাইনা নিছিলো মুজিবের আওমি লিগ, পেছিডেন ইলেকশনে আইউবের উল্টাদিকে ফাতেমা জিন্নারে ছাপোর্ট দিয়া আইউব আর তার বেছিক ডেমোক্রেছিরে লেজিটিমেছি দিছে মুজিব। [মুজিব তখন এতো বড় ছিলেন কি?]
১৯৬৫ শালের ঐ পেছিডেন ইলেকশনটা মজার; বেছিক ডেমোক্রেছির ভোটারদের ভিতর ইউনিভার্ছাল ছাফ্রেজের ক্যাম্পেইন করতেছে ‘মাদার-ই-মিল্লাত’ ফাতেমা জিন্না! ব্যাপারটা ধরেন এমন জে, জমিদারি খেদাইতে ইলেকশন করতেছেন আপনে, জেইখানে ভোটার কেবল জমিদারেরাই 🙂 ! আরো মজা হইলো, ফাতেমারে তখন ছাপোর্ট দিতেছে তখন মুজিবের লিগ এবং জামাত–এক লগেই; লিগ-জামাতের মোর্চা বেশ পুরানা দেখা জাইতেছে 🙂 ।
ইউনিভার্ছাল ছাফ্রেজের ঐ বাহানাটা ৬ দফার শুরুতেও আছে; কিন্তু আওমি লিগ ৬ দফার জেই মুভমেন্ট করে, তাতে পাবলিক ছাইকিতে কেবল রিজিওনাল-বাংগালি নেশনালিস্ট দাবি-দাওয়াই খোদাই হইতে দেখি আমরা, শারা পাকিস্তানে ডেমোক্রেছি কায়েমের মুভমেন্ট হইয়া উঠতে দেখতেছি না আদৌ!
খেয়াল করার ব্যাপার হইলো, আইউবের শাশনের ভিতর আওমি লিগ বড়ো হয় এবং পুবের পাকিস্তানে, মোছলমান বাংগালির ভিতর বাংগালি নেশনালিস্ট তোপের মুখে আইডিয়া হিশাবে পাকিস্তান খুব আনপপুলার হইয়া উঠতে থাকে; তার মানে, ইতিহাশ-পলিটিকেল বিচারে আইউব আমল আছিলো খুবই আওমি-ফেরেন্ডলি আমল!
কিন্তু এইটা খুব শম্ভব আইউব বা পরের ইয়াহিয়া বা পচ্চিম পাকিস্তানের মিলিটারি-ছিভিল এস্টাবলিশমেন্ট মুজিবের আওমি লিগের ব্যাপারটা বুঝতেই পারে নাই! ফলে ১৯৭০ ইলেকশনে মুজিবের জয়ে পচ্চিম মস্ত টাশকি খায়।
ঝামেলা হইলো, মুজিব-লিগ জদি পাকিস্তানে ইলেকশনই করতে পারে, করতে দেওয়া হয়, তাইলে শেই ইলেকশনে শে জিতলে, জেতার পরে তো তার হাতে খমতা না দিয়া পারবেন না! মানে হইলো, আগরতলা মামলায় শাজা দিতে পারতো পাকিস্তানের আদালত, কিন্তু আইউব উৎখাতের ডামাডোলে শেইটা চাপা পড়ে, কিন্তু জেতার পরে মুজিবের হাতে পাকিস্তানের খমতা না দিয়াই জেন বা আগরতলা মামলার শাজা দেওয়া হইতেছে; আদালতে শাজা না দিয়া পলিটিকেলি মোকাবেলার চিন্তা করা হইলো, কিন্তু পলিটিকেলি মোকাবেলা করতে না পাইরা ইয়াহিয়াই আদালত হইয়া উঠলো!
ওদিকে, মুজিব তো মস্ত মওকা পাইয়া গেছে; তার হাতে পাকিস্তানের মেজরিটি [ পুবে ৭.৫ কোটি, পচ্চিমে ৫.৬ কোটি], পুরা পুবের পাকিস্তান, শে মেজরিটারিয়ান রুল কায়েম করতে চাইলো। খেয়াল করেন, আপনে জখন বেছিক ডেমোক্রেছির নামে খোদ ডেমোক্রেছিই মুলতবি রাখতে গেলেন, তখন ডেমোক্রেছির টেরিটরি পার হইয়া মেজরিটারিয়ান রুলের শম্ভাবনা পয়দা হইলো! একই ঘটনা আপনে পাইবেন হাসিনায়; ডেমোক্রেছি মুলতবি রাইখা পালাইতে হইলো লিগের, তার ফল হইছে এই জে, বাংলাদেশও এখন পপুলিস্ট-মেজরিটারিয়ান টাইরানির শম্ভাবনা দেখা দিছে! বাংলাদেশ হয়তো আখেরে বাইচা জাবে, উইক হইলেও ডেমোক্রেছিতেই ফিরতে পারবো আমরা খুব শম্ভব– এতো বছর ফন্দি-ফিকির কইরাও বিম্পিরে খুন করতে পারে নাই হাসিনা– শেই কারনে!
এই পয়েন্টে তাইলে আমরা দেখতে পাইলাম জে, মুজিব-লিগ পাকিস্তানের জন্ন জতো খারাপই হৌক না কেন, শেইটা আইউবের মারফতে পাকিস্তানের হিস্ট্রিকেল আমলনামারই ফল এবং তারে আদালতে পানিশমেন্ট না দিয়া, ইলেকশন করতে দিয়া, জেতার পরে তার হাতে খমতা দিয়া তারে পলিটিকেলি মোকাবেলার ডিছিশন না লইয়া ইয়াহিয়া জখন নিজেই আদালত হইয়া উঠছে, পাকিস্তান তখন রাশ্টো হিশাবেই ভাইংগা পড়ছে! ইয়াহিয়া-পচ্চিমের ঐটা তাইলে খোদ পাকিস্তান আইডিয়ার লগেই গাদ্দারি, আগে জেই গাদ্দারি কইরা গেছে আইউব খান! মুজিব-লিগ-ইনডিয়া জতো কন্সপিরেছিই করুক না কেন, তা কামিয়াব হবার হিস্ট্রিকেল শর্ত জোগান দিতে ইয়াহিয়া-পচ্চিমের ঐ গাদ্দারি খুনে চইলা গেলো ২৫ মার্চের অপারেশন ছার্চলাইটের ভিতর দিয়া! এইভাবে জনগনের ইলেকটেড খলিফাদের হাতে খমতা দেবার বদলে মোছলমান বাংগালির উপর পাকিস্তান রাশ্টের হামলার ভিতর রাশ্টো হিশাবে ইতিহাশে বাংলাদেশ রেশনাল হইয়া উঠতে পারলো।
খ. ইতিহাশের কতোগুলা টুরুথ এমনভাবে এখন হাজির হইতে পারছে জে, মুক্তিজুদ্ধ নিয়া কতোগুলা দাবি বেশ বেকায়দায় পইড়া গেছে।
১৬ ডিশেম্বরের বিজয় দিবশ পালন করা হইতেছে বাংলাদেশে এবং ইনডিয়ায়; পোশ্ন উঠতেছে জে, আমরা কারে হারাইলাম জে বিজয় দিবশ পালন করতেছি?
খেয়াল করার ব্যাপার হইলো, ১৮ ডিশেম্বর ১৯৭১ তারিখে পাকিস্তান আর্মির জেই পাট বাংলাদেশ দখল কইরা রাখছিলো (ইস্টার্ন কমান্ড), তারা ইনডিয়ার কাছে ছারেন্ডার করে, বাংলাদেশের কাছে না এবং ২২ ডিশেম্বর তাজউদিন ইনডিয়া থিকা দেশে ফেরার আগে বাংলাদেশ পুরাটাই ইনডিয়ার দখলে ছিলো এবং ইনডিয়ার দখলে থাকাটারেই আমাদের বিজয় ভাবার উপায় নাই।
ইতিহাশের দুয়েকটা ঘটনা মিলাইয়া পড়তে পারি আমরা এইখানে। জুলাই ২৪ হুলাহুলিতে হাসিনা পালাবার আগে ইনডিয়ান মিলিটারির মদদ চাইছিলো, কিন্তু মোদি এমনকি হাসিনারে পালাবার বিমানও দেয় নাই; গত কয় বছরে আমরা দেখছি জে, ছিরিয়ায় বাশার আল আছাদ রাশান আর্মি ডাইকা নিছে, বেলারুশের লুকাশেংকোরেও মদদ দিতে বাহিনি পাঠাবার ঘোশনা দিয়া রাখছিলো পুতিন, ২০২০ শালে। ১৯৭১ শালে ইনডিয়ারে ফর্মালি এটাক করে পাকিস্তান ৩ ডিশেম্বর, ইনডিয়ার লগে পাকিস্তানের বর্ডার বরাবর। বাংলাদেশ বর্ডারে ইনডিয়ার মাটিতে আগেও ছোটখাট এটাক করছে পাকিস্তান, কিন্তু ঐগুলা বাংলাদেশি রিফিউজি আর মুক্তিবাহিনির লোকেশনে।
ছিরিয়ার আছাদ আর বেলারুশের লুকাশেংকোর মতোই ৩ ডিশেম্বর ইনডিয়ান আর্মিরে বাংলাদেশে ঢোকার পারমিশন দেয় তাজউদ্দিন। এবং বাস্তবে পাকিস্তান আর্মির জেমন রাজাকার-আল বদর আছিলো, তেমনি মুক্তিবাহিনি হইয়া পড়ে ইনডিয়ান আর্মির রাজাকার! কেননা, বাংলাদেশ আর্মি ইনডিয়ান আর্মির কমান্ডে জুদ্ধ করে ৩ ডিশেম্বরের পরে এবং মুক্তিবাহিনি তখন ইনডিয়ান আর্মির কমান্ডে থাকা বাংলাদেশ আর্মির লেজুড় (গালভরা একটা নাম আছে বটে–গনবাহিনি)। দেখা জাইতেছে, হাসিনা জে ইনডিয়ান আর্মিরে ডাকতেছিলো, আওমি লিগের ঐ ডাকাডাকি বেশ পুরানাই।
তবে, অনেকে কইতে পারেন জে, বাংলাদেশের কাহিনি আর ছিরিয়া আর বেলারুশের কাহিনি মিলানো উচিত হয় না, কেননা, বাংলাদেশ হানাদারের দখলে, আর ঐ দুই দেশে ছিভিল ওয়ার কিছিমের ঘটনা ঘটতেছে!
কিন্তু পয়েন্ট হইলো, আমরা জিতি নাই, ইনডিয়া জিতছে; ফলে ১৬ ডিশেম্বর আমাদের অতো ফুর্তি করার কারন নাই। মিলাইয়া ভাবতে পারেন ইংরাজের ব্যাপারটা; ১৮৫৭ শালে জদি ইংরাজেরে হারাইতে পারতো হিন্দুস্তানের বাদশা শাহালম, তাইলে আমরা শেই বিজয়ের দিনে জেমন ফুর্তি করতে পারতাম, তা ১৯৪৭ শালে করার কারন পাওয়া জায় নাই; কেননা, ইংরাজ নিজেই গেছে, আমরা বিটিশেরে হারাইয়া শাধিন হই নাই, জেমনটা আমেরিকা হইছিলো! ফলে শাধিন হওয়া আর জেতা–দুইটা দুই জিনিশ; তার উপর ১৬ ডিশেম্বর আমরা এমনকি শাধিনও হই নাই, জাস্ট পাকিস্তানে বদলে ইনডিয়ার দখলে গেছি!
তাইলে ঘটনা কেমন হইতে পারতো? ইনডিয়ার শর্তে ইনডিয়ান আর্মি ঢোকার পারমিশন দেওয়া উচিত হয় নাই তাজউদ্দিনের; বড় জোর বাংলাদেশ আর্মির কমান্ডে ইনডিয়ান আর্মির কিছু মেম্বার কর্জ নেওয়া জাইতে পারতো। কেননা, ইনডিয়ান আর্মি কিন্তু পুব পাকিস্তানে ঢুকতেছে না, বাংলাদেশে ঢুকতেছে! তবে, বেস্ট হইলো, আরো কনফিডেন্ট হওয়া; এমন জে, পচ্চিমে জদি ইনডিয়া পাকিস্তানের জমিন দখল করতে থাকে, তাইলে বাংলাদেশে আমরাই হারাইতে পারবো পাকিস্তান বাহিনিরে। জদি না পারি, তাইলে বাংলাদেশ নামের রাশ্টো পাবার হক কতোটা থাকে আমাদের, ইনডিয়া বা মায়ানমারের হাত থিকা নিজেদের ডিফেন্ডই বা করবো কেমনে!
কিন্তু আমাদের নেতাদের দুর্বলতা, হিম্মতের ঘাটতি আর ইনডিয়ার ইন্টারভেনশন কি বাংলাদেশের জনগনের হক নাই কইরা দিতে পারে? না।
পাকিস্তান আর্মি ২৫ মার্চে মেছাকার/জেনোছাইড শুরু করছে; আওমি লিগেরে মোছলমান বাংগালির ভোট দেওয়ারে গাদ্দারি আর কেরাইম হিসাবে দেখছে; ভাশানি-মুজিবের চালাকি আর ফুশলানি বা ইনডিয়ার লগে কন্সপিরেছি, কারন জেইটাই হৌক, পুবের পাকিস্তানের মোছলমান বাংগালি মুজিবের আওমি লিগেরে ভোট দিছে, মোছলমান বাংগালি ইলেকশনের ভিতর দিয়া জেই খলিফা বাছাই করছে, তারে মাইনা নেবার বদলে উল্টা হামলা করছে পাকিস্তান!
পলিটিকেল এথিক্সের জমিন থিকা আমাদের জনতার ঐ কবুলিয়তকে দেখতে হবে, পাত্তা দিতে হবে; মানুশ ভুল করতে পারে, আবার শেইটা পরে বুঝতে পারে; আমরা বুঝাইতে পারি, দাওয়াত দিতে পারি, কিন্তু গায়ের জোরে বাদ্ধ করতে পারি না; কেননা, কবুলিয়তে পাত্তা না দিয়া গায়ের জোরে বাদ্ধ করাতেই গোলামির শুরু এবং বাদ্ধ করায় জেই গোলামি পয়দা হয়, হিউম্যান ডিগনিটির শবচে খারাপ হালত শেইটা, আনএক্সেপ্টেবল!
পাকিস্তানের হামলার জবাবে মোছলমান বাংগালি কইছে, থাকবো না এক লগে, ইনডিয়ার লগে বুঝবো নে পরে, আগে তোমার থিকা জুদা হবো আমি; মোছলমান বাংগালির জুদা হবার শেই বাশনাই আমরা পাইলাম ২৭ মার্চের কালুরঘাটে; ১৯৬৫ শালের জুদ্ধে জেই মোছলমান বাংগালি ছিপাই বাহাদুরি দেখাইয়া পাকিস্তান মিলিটারির খেতাব পাইছে, শেই মেজর জিয়াই কইলো, উই রিভল্ট! আইউবের ভিতর দিয়া পাকিস্তান রাশ্টের জেই আমলনামা, তাতে মস্ত ফেইলুরের ছুরত হইলেন মেজর জিয়া–৫ বছর আগেই জে লয়্যাল বাহাদুর, এখন শে কইতেছে, ‘উই রিভল্ট’। এইখানেই আমরা পাইতেছি, রাশ্টো হিশাবে ইতিহাশে বাংলাদেশের জায়েজ হইয়া ওঠা।
গ. একাত্তরের ইতিহাশের বাংগালি নেশনালিস্ট বয়ান জে খুবই একপেশে, শেইটা মোটামুটি বুইঝা ফেলছে শবাই, মিছা মায়ায় আন্ধা হইয়া নাই আর দেশের আমজনতা!
একপেশে বলতে বুঝাইতেছি, খুনাখুনির ইতিহাশ দেখায় নাই ঐ বয়ান, ছেরেফ নিজের ভিকটিম হবার গানই গাইয়া গেছে! ঐ বয়ানের বাইরের লোকজনের হিশাবে পাকিস্তানের হাতে একাত্তরে বাংলাদেশি খুন হইছে মোটামুটি ৩ লাখ, শেইটারে ১০ গুন বাড়াইয়া ঐ বয়ান কইতেছে ৩০ লাখ; ওদিকে, ঐ লোকজনের হিশাবে অন্তত ২০ হাজার বিহারি খুন হইছে বাংগালিদের হাতে; ওয়ার কেরাইম দুই তরফেই ঘটছে, কাদেরিয়া বাহিনি বেয়নেট দিয়া খোচাইয়া রাজাকার মারার ছবিও আছে ১৬ ডিশেম্বরের পরের।
এখন দেখা জাইতেছে, ২৫ মার্চের আগেই বিহারিদের খুন করা শুরু করছে বাংগালিরা; এই ঘটনাগুলার কথা বইলা অনেকে ২৫ মার্চে পাকিস্তান আর্মির অপারেশন ছার্চলাইটকে জায়েজও করতে চাইতেছেন অনেকে; ঐ অপারেশনকে দেখাইতে চাইতেছে ‘রিয়েকশন’ হিশাবে। ইতিহাশে রাশ্টো হিশাবে বাংলাদেশকে রেশনালাইজ/জাস্টিফাই করার বেলায় বিহারি খুনের ব্যাপারটা আরেকটা মুশকিল হিশাবে দেখতে হবে আমাদের; কেননা, অপারেশন ছার্চলাইট জদি ছেরেফ রিয়েকশন হয়, বিহারিদের বাচাইতে পাকিস্তান রাশ্টের নেছেছারি মেজার হিশাবে দেখতে হয় আমাদের, তাইলে ২৭ মার্চে মেজর জিয়াব জবাব তখন লেজিটিমেছি হারাইতে শুরু করে!
ফলে এই ব্যাপারটাকে মোকাবেলা করতে হবে আমাদের, আমরা জারা বাংলাদেশকে ইতিহাশে লেজিট/জায়েজ রাশ্টো ভাবি এবং রাশ্টো হিশাবে বাংলাদেশকে বহাল রাখতে চাই, তাদের জন্ন ঐ মোকাবেলা খুবই জরুরি; নাইলে বাংলাদেশ তার মোরাল গেরাউন্ড হারাইতে থাকবে এবং দেশের নাগরিকদের ভিতরে বাংলাদেশ একটা ঐতিহাশিক এক্সিডেন্ট হিশাবে ভাবনা পাওয়ারফুল হবে এবং ইতিহাশকে মেরামত করতে পাকিস্তানের দিকে কদমে কদমে আগাইতে থাকবে!
তো, কেমনে মোকাবেলা করবো আমরা? জেইখানে কিনা টোটাল পপুলেশন আর ভিকটিমের রেশিও বিবেচনায় নিলে বিহারিদের ভিতর ভিকটিমের % বেশি!
শুরুতেই আমাদের খেয়াল করা দরকার জে, বিহারি নামে জাদের ডাকা হইতেছে, তারা পাকিস্তান পক্ষের লোকজন, জেই পাকিস্তান পুবের পাকিস্তানের জনগনের ইলেকটেড খলিফাদের মাইনা নিতে নারাজ; ফলে একজনও খুন হবার আগেই আমরা দেখতে পাইতেছি জে, ঐ বিহারিরা আছিলো জালিম পক্ষ।
এইখানে আমি ২৫ বছরের আগের কলিকাতায় ‘ডাইরেক একশন ডে’ মনে রাখতে কইবো। ১৯৪৬ শালের ১৬ আগস্ট আছিলো জিন্না/মুছলিম লিগের ডাইরেক একশন ডে, বাংলার শরকার ঐ দিন ছুটি দিছিলো। মুছলিম লিগ তখন বিটিশ ইনডিয়ার মাইনোরিটির খলিফা, এই মাইনোরিটি নিজের ছিকিউরিটি লইয়া চিন্তিত, চতুর কংগেরেছের হাতে নিজেদের নছিব লেইখা দেবার খমতা দিতে নারাজ, ইংরাজ শেইটাই করতেছে বইলা শন্দেহ করতেছে তারা; শেইখান থিকাই তারা রাস্তায় নামছে। তারপর ভায়োলেন্স শুরু হয়; মুছলিম লিগের দিক থিকাই ভায়োলেন্স শুরু হইছে বইলা দাবি আছে; কিন্তু আখেরে হিন্দু-মোছলমান, দুই পক্ষেই পেরায় শমান খুন হয়, মোটমাট ৪-১০ হাজার বইলা আন্দাজ করতেছে লোকে। একদিকে, মুছলিম লিগ খুবই জাস্ট কজে মুভমেন্ট করতেছে, কিন্তু তারা ডিছিশন লইয়া বা তাদের ভিতরের হঠকারি কেউ শুরু করুক না কেন, ঐ দিক থিকাও জবাব আশে শমান; শুরুটা এই দিক থিকা হইলেও তখনকার কংগেরেছি হিন্দুরাই জালেম পক্ষ। মানে আমাদের আশল দেখবার পয়েন্ট হইলো, কোন পক্ষের কজ জাস্টিফাইড; ভায়োলেন্স জিনিশটারে হিউম্যান কোর হিশাবে আমাদের মাইনা নেওয়া ভালো এবং শেইটারে ঠান্ডা রাখার একমাত্র তরিকার নাম ইনছাফ। ফলে কোন কোন জাতি বা ধর্মের মানুশেরা ভায়োলেন্ট, এইটার তেমন মানে নাই, কেননা, দরকারে শকল মানুশই ভায়োলেন্ট হইতে পারে এবং ইনছাফের ঘাটতি শেই হইতে পারারে ফুশলাইতে থাকে। ওদিকে, কোন দুইটা কজ লইয়া দুই পক্ষ মারামারি শুরু করলে, কোন একটারে জাস্টিফাইড হিশাবে মাইনা নিলেও ছেরেফ পরিচয়ের কারনেই একদম ইনোছেন্ট মানুশেরাও ভিকটিম হয় পেরায়ই। শেইটা কলিকাতাতেও হইছে, দুই পক্ষেই। এতো বছর পরে তাই আমরা ঐটারে রায়ট হিশাবেই চিনি মোটামুটি, ছেরেফ কোন এক পক্ষ ঐখানে মজলুম না, বা আরেক পক্ষ ছেরেফই জালেম!
ইনছাফের পক্ষের বয়াতি হিশাবে আমি শেই ১৯৪৬ শালের বরাবর হিশাবে ১৯৭১ শালে বিহারিদের উপর হওয়া জুলুমেরে দেখবার পোস্তাব দিবো: বাংগালি-বিহারি রায়ট। বাংগালির কজ তখন জাস্ট, কিন্তু জোগবিয়োগ করলে বিহারিরা ভিকটিম; কিন্তু তারা জালেম পক্ষও, তাদের হাতেও বাংগালি খুন হইছে; দুই পক্ষেই ইনোছেন্ট ভিকটিম আছে, ফলে আমরা দেখবো ঐটাই জে, কোন পক্ষ জাস্ট কজে আছে।
বাংগালিরা বিহারি খুন করলেও, আবার বিহারিরাও পাকিস্তান আর্মির লগে মিলা বাংগালি খুন করলেও কোনটারেই আমি ভিলেন হিশাবে দেখতে না করবো; এই ঘটনার ভিতর পাকিস্তান রাশ্টের ফেইলুরের কতোগুলা আলামত আছে!
খেয়াল করেন, পুবের পাকিস্তান কিন্তু পাকিস্তানে মেজরিটি, পেরায় ২ কোটির ফারাক দেখতেছি আমরা ১৯৭০’র ইলেকশনে। এই ঘটনাটাই কিন্তু আখেরে মুজিব-লিগ-ইনডিয়ার পক্ষে মস্ত লেভারেজ হিশাবে কাম করছে।
পচ্চিম পাকিস্তানের পলিটিকেল এলিট এবং আইউব খান জদি ডেমোক্রেটিক হইতো, তাইলে পুবের পাকিস্তানের ঐ মেজরিটি হবার শুবিধা হইয়া আগেই চিন্তিত হইতো! কিন্তু তারা তো মানুশের নাম্বারের বদলে ডিক-মেজারিং কইরাই খুশি হইয়া আছিলো!
অথচ তারা জদি ঐটা লইয়া ভাবতো আগে, তাইরে আইউবের ১২ বছরে এই ডেমোগ্রাফিক ফারাক ম্যানেজ করায় মন দিতে পারতো এবং তাতে ঐ বিহারিরা মস্ত শুবিধা দিতে পারতো পচ্চিমেরে! তা বাদেও পুবের পাকিস্তানে হিন্দুদের জেই হামলার ঘটনা ঘটছে, জোগেন মন্ডল জখন ইনডিয়া চইলা গেলো, আরো আরো হিন্দুরা গেলো, তখন শেই হিন্দুদের পচ্চিমে আদর কইরা লইয়া জাইতে পারতো পচ্চিম! রেছিস্ট না হইয়া বাংগালিদের পচ্চিমে মাইগ্রেট করার পলিছি হাতে নিতে পারতো! বাংগালি অনেকে পচ্চিমে গেছে এমনিতেই (ভুট্টোর পাট্টির ট্যাগ-লাইন, ‘রুটি, কাপড়া অর মকান’, এইটা একজন বাংগালির লেখা), কিন্তু পচ্চিম তেমন কোন পলিছি নেয় নাই। ১৯৬০-৭০ জুগে দুনিয়ায় বার্থ কনটোল শুরু হয়, পুবের বার্থরেট কমাইতে উন্নয়নের গান গাইয়া আইউব বার্থ কনটোলের ক্যাম্পেইন করতে পারতো! কিন্তু পচ্চিমের পলিটিকেল এলিট আন্দাজ করি, নেচারের উপর ছাইড়া দিছে ব্যাপারটা; মানে হারিকেন-টাইফুন আর বানের পানিতেই ভাইশা জাবে এবং বাংগালি আর মেজরিটি থাকতে পারবে না বইলা ধইরা নিছে মনে হয়! বাস্তবে হইছে উল্টা; হিউম্যান ইন্সটিংক্ট তখন আরো বেশি জনম দিতে চাইছে এবং নাগরিকদের বাচাইতে আইউব/পচ্চিম কাফি চেশ্টা-তদবির করতেছে না বইলা খেপছে পুবের মানুশ, আখেরে শেই ফশল ঘরে তুলছে মুজিব-লিগ!
ছো, বিহারি আর বাংগালিদের পচ্চিমে নিয়া জমিজমা দিয়া ছেটেল করাইয়া, ভোটার বানাইয়া পুবের মেজরিটি হবার শুবিধা কমাইতে পারতো পচ্চিম এবং এইভাবে ডেমোক্রেটিক হইয়া উইঠা মুজিব-লিগ-ইনডিয়ার পোপাগান্ডা দুর্বল কইরা রাখতে পারতো পচ্চিম।
ফলে একাত্তরে পুবে জেই বিহারি খুন হইলো, তারা পাকিস্তান রাশ্টের ডেমোগ্রাফিক পলিছির ফেইলুরেরও ভিকটিম। এবং ঐ ফেইলুর আখেরে ইনডিয়ান এজেন্ডারে আগাইয়া নিয়া জাওয়া।
তাইলে বিহারি খুনের ঘটনাগুলা বাংগালির ওয়ার-কেরাইমের বিচারের শম্ভাবনা পয়দা করে, বাংলাদেশকে রাশ্টো হিশাবে ইতিহাশে ডিলেজিটিমাইজ করতে পারে না। দুই তরফেই ওয়ার-কেরাইম হইছে এবং জুদ্ধে তাই ঘটে পেরায়ই, কেননা, জুদ্ধ একটা আলগা টাইম পয়দা করে, মানুশের ভিতরের শয়তান তখন শবচে পাওয়ারফুল হইয়া ওঠে; মানুশের জাস্ট কজও তার ভিতরের শয়তান তখন শয়তানির মওকা হিশাবে এস্তেমাল করে।
তো, এই লম্বা আলাপটা কি বেহুদা? এখনকার বাংলাদেশের অনেকেই শেইটা কইতে চাইবে। কিন্তু আমি ফিউচারের কেরাইছিছ লইয়া ভাবি পেরায়ই, জেইটা হয়তো এখন পয়দা হইতেছে, কিন্তু অতি পুচকে বইলা এখনো তারে কেরাইছিছ হিশাবে চিনতে পারতেছে না লোকে। আমি তখন ডরাই; মনে হইতে থাকে জে, জখন লোকে বুঝবে, ততখনে বেশ দেরি হইয়া জাবে হয়তো।
একটা পপুলেশনের ভিতর ডমিনেন্ট/মাতবর/মোড়ল ইতিহাশ ভাবনা তার মোতাবেক পলিটিকেল মোটিভ পয়দা করে; বাংলাদেশের ইতিহাশ ভাবনায় বাংগালি নেশনালিস্ট বয়ানের পতন ঘটছে; ফলে ইতিহাশ ভাবনায় বাংলাদেশের বুনিয়াদ আবার বানাইতে হবে আমাদের। নাইলে গত ৫০ বছর জেমন এন্টি-বাংলাদেশ ইতিহাশ ভাবনার শাশনে জুলুমের ভিতর আছিলো দেশের মানুশ, তেমনি আর কোন ইতিহাশ ভাবনা শেই জমিন দখল করবে এবং শেইটাও পছিবলি এন্টি-বাংলাদেশ হবে। শাধিন থাকতে হিম্মত লাগে জরুর, আরো বেশি লাগে বাশনা। এবং শেই বাশনার মায়ের নাম ইতিহাশ। ইতিহাশ বোঝাবুঝির কুয়ার ভিতর পয়দা হয় পলিটিকেল বাশনা।
১২আগস্ট২০২৫

comment/ফতোয়া